আব্দুর রশিদ মোল্লা, শ্রীপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি: মাগুরার শ্রীপুরে একটি মাদ্রাসায় কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছিল ৪৯০ কেজি সরকারি বিনামূল্যের পাঠ্যবই। তবে স্থানীয়দের সন্দেহে বিষয়টি প্রকাশ পায় এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস বইগুলো উদ্ধার করে।
গত শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার সব্দালপুর ইউনিয়নের আমতৈল জেটিএস কাদেরীয়া (রহঃ) দাখিল মাদ্রাসার সহকারী সুপার আছাদুজ্জামান ও তিন শিক্ষক এসব সরকারি বই স্থানীয় এক ভাঙ্গাড়ি ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করছিলেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী সংখ্যা মাত্র দেড়শ হলেও অতিরিক্ত বই সংগ্রহ করা হতো এবং পরবর্তীতে তা বিক্রি করা হতো বলে অভিযোগ ওঠে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল গণি বলেন, “নতুন বা পুরাতন, সরকারি বই বিক্রির অধিকার কারও নেই। এটি প্রশাসনের নির্ধারিত পদ্ধতিতে খোলা টেন্ডারের মাধ্যমে হতে হয়। অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অন্যদিকে, মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার আসাদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “মাদ্রাসার আর্থিক সংকট থাকায় পুরাতন বই বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তবে এটি কোনো রেজুলেশনে করা হয়নি।”
ঘটনার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাখী ব্যানার্জি জানান, অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে দাপ্তরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ঘটনায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছে। ইউএনও’র স্বাক্ষরিত গোপনীয় প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তদন্তে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিরা হলেন, সহকারী সুপারিন্টেন্ডেন্ট আসাদুজ্জামান, সহকারী শিক্ষক (এবতেদায়ী প্রধান মোঃ রেজাউল ইসলাম, সহকারী শিক্ষক আকিদুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষক জাবেদ আলি, দপ্তরী শহীদুল ইসলাম।
তাদের ১০ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। যথাযথ জবাব না দিলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুল গনি জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কড়া নজরদারি করা হচ্ছে। জেলা শিক্ষা অফিসসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নোটিশের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা মনে করছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে।