এস চাঙমা সত্যজিৎ, স্টাফ রিপোর্টারঃ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সদর উপজেলার পেরাছড়া ইউনিয়নের বেলতলী পাড়ার বয়োঃবৃদ্ধ ৭৩ বছর বয়সী বরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও ৭০ বছর বয়সী প্রভাতী বালা ত্রিপুরার এক নতুন জীবনের শুরু হয়েছে। খাগড়াছড়ি রিজিয়নের সেনাবাহিনীর সহায়তায় তারা পেলেন একটি নতুন বাড়ী।
আজ বৃহস্পতিবার ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ খাগড়াছড়ি রিজিয়নের ২০৩ ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডারের পক্ষে খাগড়াছড়ি সদর জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. খাদেমুল ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের নতুন বাড়ীর উদ্বোধন করেন।
ইতোপূর্বে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও পত্রিকায় “অসহায় বৃদ্ধ দম্পতির জীবন সংগ্রাম: সরকারী সহায়তার অভাবে ঝুপড়ি ঘরে কাটছে শেষ বয়স” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি নজরে আসে খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসানের। তিনি দ্রুত বরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা দম্পতির জন্য নগদ ১০ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করেন এবং তাদের জন্য একটি নতুন বাড়ী নির্মাণের আশ্বাস প্রদান করেন।
রিজিয়ন কমান্ডারের নির্দেশে খাগড়াছড়ি রিজিয়নের নিজস্ব অর্থায়নে এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগীতায় নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সেই জরাজীর্ণ ঝুপড়ি বাড়ীর পরিবর্তে তৈরী হয় একটি পাকার উপর রঙিন ছাদের নতুন বাড়ী।
নতুন পাকা বাড়ী পেয়ে বরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, “আগে তো আমার বাড়ী ছিল না, এখন তো সেনাবাহিনী আমাদের বাড়ী তৈরী করে দিয়েছে। এখন সুখে-শান্তিতে থাকতে পারবো।”
বরেন্দ্র লাল ত্রিপুরার স্ত্রী প্রভাতী ত্রিপুরাও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, “আগে ভাঙা বাড়ীতে থাকতাম, এখন নতুন পাকা বাড়ী পেয়ে ভালো লাগছে।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাদিকদেরকে খাগড়াছড়ি সদর জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. খাদেমুল ইসলাম বলেন, “স্থানীয় সংবাদকর্মীদের প্রচারিত খবরের সূত্র ধরে রিজিয়ন কমান্ডার মহোদয় এ উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি আরও বলেন, আমরা সেনাবাহিনী সবসময় জনগণের পাশে আছি এবং থাকব। খাগড়াছড়ি রিজিয়নের আওতায় কেউ গৃহহীন থাকবে না, কেউ না খেয়ে থাকবে না—এটাই আমাদের অঙ্গীকার।”
স্থানীয় পেরাছড়া ইউপি সদস্য বিপ্লব ত্রিপুরা রিংকু বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে এই দম্পতি জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করছিলেন। সংবাদকর্মীদের প্রচারের ফলে বিষয়টি রিজিয়ন কমান্ডারের নজরে আসে এবং আজ ১৩ ফেব্রুয়ারী তারা নতুন পাকা বাড়ী পেলেন। আমরা সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই এবং ভবিষ্যতেও এ ধরণের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে আমরা আশাবাদী।”
স্থানীয় বিএনপি নেতা সরনাথ ত্রিপুরাও সেনাবাহিনীর এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, “সংবাদমাধ্যম ও সেনাবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে এই অসহায় দম্পতি পাকা বাড়ী পেয়েছেন। আমরা এ ধরণের ইতিবাচক সংবাদ প্রচারকে স্বাগত জানাই।”
বরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও প্রভাতী ত্রিপুরার জীবনে এক নতুন সূচনার সৃষ্টি হলো সেনাবাহিনীর সহায়তায়। এটি প্রমাণ করে, সংবাদ প্রচার শুধু তথ্য সরবরাহের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং ইতিবাচক পরিবর্তনের শক্তিশালী হাতিয়ারও বটে "।